ধর্মভিত্তিক অরাজনৈতিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীকে সংগঠনটির আমির করার প্রস্তাব দিয়েছেন ফটিকছড়ির সংসদ সদস্য সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারি। এ ছাড়া আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী জামায়াত-শিবির করেন না বলেও দাবি তার।
রোববার (২৫ অক্টোবর) বিকেলে ফটিকছড়ির নাজিরহাট বড় মাদরাসার উদ্ভূত সংকট নিরসনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব বলেন তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান নজিবুল বশর মাইজভান্ডারি।
তিনি আরও বলেন, আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী জামায়াতের বিরুদ্ধে বই লিখেছেন। তিনি ও তার মামা আল্লামা মহিবুল্লাহ বাবুনগরী জামায়াত বিদ্বেষী। সরকারের কাছে বিভ্রান্তি ছড়ানোর জন্য একটি পক্ষ ষড়যন্ত্র করছে। সরকারের পাশ থেকে দূরে সরানোর জন্যই এ ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। আমি জামায়াতের বিরুদ্ধে মামলা করেছি, নিবন্ধন বাতিল করেছি,আমি জানি কে জামায়াতের, কে নয়।
নানা নাটকীয়তার পর রোববার নাজিরহাট বড় মাদরাসায় এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারি বলেন, পূর্বের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী ২৮ অক্টোবর মাদরাসা পরিচালনার সর্বোচ্চ পরিষদ শূরা কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
বৈঠকে শীর্ষ আলেমগণ যে সিদ্ধান্ত নেবেন সে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মাদরাসার পরিচালক নিয়োগসহ পরবর্তী সকল কার্যক্রম পরিচালিত হবে। এতে আমাদের সরকার ও প্রশাসন সহযোগীতা করবে।
তিনি বলেন, শূরার বৈঠকে আগত সকল উলামায়ে কেরামের নিরাপত্তা দেবে প্রশাসন। বৈঠকে কেউ যদি কোনো গোলযোগ সৃষ্টি করতে চায়, তাহলে প্রশাসন তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
এর আগে শনিবার দুপুরে আগামী ২৮ অক্টোবর অনুষ্ঠিতব্য শূরার বৈঠকের বিরোধিতা করে এলাকাবাসী ও মাদরাসার ছাত্র-শিক্ষকদের ব্যানারে এক সংবাদ সম্মেলন আহবান করেন মাদরাসার বর্তমান পরিচালক দাবীদার মাওলানা সলিম উল্লাহ। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত কয়েকজন বক্তা আগামী ২৮ অক্টোবর শূরার বৈঠক প্রতিহতের ঘোষণা দিলে উপস্থিত ছাত্রদের মধ্যে একটি পক্ষ ওই বক্তব্যের বিরোধিতা করে শূরা কমিটির বৈঠক চাই বলে শ্লোগান শুরু করে। তখন ছাত্রদের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়।
পরিস্থিতি উত্তপ্ত হতে থাকলে সেখানে উপস্থিত পুলিশ সদস্যরা উভয় পক্ষকে শান্ত করার চেষ্টা করেন। ঘটনাস্থলে পুলিশ ও র্যাব সদস্যরা অবস্থান নেয়। সন্ধ্যা পর্যন্ত ছাত্রদের বিক্ষোভ অব্যাহত থাকে।
পরে রাতে ফটিকছড়ির সংসদ সদস্য নজিবুল বশর ও বাবুনগর মাদরাসার মুহতামিম আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
তখন তিনি বলেন, আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীর নির্দেশনায় আমি এ মাদরাসায় এসেছি। তাছাড়া আমি ফটিকছড়ির সংসদ সদস্য। এখানে কেউ আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটাতে পারবে না।
মাদরাসার পরিচালকের পদ নিয়ে মাওলানা সলিমুল্লাহ ও মাওলানা হাবিবুর রহমান কাসেমীর মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছে। মাওলানা সলিমউল্লাহ প্রয়াত আল্লামা শফীর অনুসারী। অন্যদিকে মাওলানা হাবিবুর রহমান হেফাজতের মহাসচিব আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীর অনুসারী।
সংবাদ সম্মেলনে আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী, ফটিকছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান এইচ এম আবু তৈয়ব ও মাওলানা হাবিবুর রহমান হাসেমী উপস্থিত ছিলেন।