মুফতি লুৎফুর রহমান ফরায়েজী।।
জাতীয় কবি নজরুল বলে গেছেন-
বিশ্বে যা-কিছু মহান্ সৃষ্টি চির-কল্যাণকর,
অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর।
হ্যাঁ। কবি সত্য বলেছেন। নারীর অবদান ধরিত্রীতে পুরুষের চেয়ে কোন অংশেই কম নয়। কিন্তু সর্বযুগেই নারীরা ছিল অধিকার বঞ্চিত। নানাভিদ বঞ্ছনার শিকার। এখনো নারী অধিকারের নামে নারীকে জাহেলী যুগের সেই পণ্য করার প্রতিযোগিতাই পরিলক্ষিত হয়। আমরা এ প্রবন্ধে সংক্ষেপে ইসলাম আসার পূর্বে নারীদের অবস্থা তুলে ধরবো। তারপর ইসলাম এসে নারীদের কোন স্থানে উন্নীত করেছে তাও উল্লেখ করবো ইনশাআল্লাহ।
ইসলামপূর্ব নারী
ইসলাম পূর্ব সময়ে নারীদের মানুষ হিসেবে কোন মর্যাদা ছিল না। তাদের কেবলি অন্যান্য ব্যবহার উপযোগী পণ্য মনে করা হতো। নারী জন্মকে পাপ মনে করা হতো। লজ্জজনক মনে করা হতো। নারীদের পণ্যের মত বাজারে বিক্রি করা হতো। নারীদের কোন মীরাছী হক ছিল না। কোন মেয়েকে কোন পুরুষ হত্যা করলে, তার বদলে হত্যাকারী তার ঘরের একজন মেয়েকে প্রেরণ করতো। যাতে করে হত্যার বদলে তাকে হত্যা করা হয়।
কন্যা সন্তান জন্ম নিয়ে সমাজের লজ্জায় পিতারা তার কন্যাকে জীবন্ত দাফন করে দিতো। হায়েজ নেফাসের সময় নারীদের আলাদা ঘরে রেখে দেয়া হতো। নারীদের তালাকের কোন অধিকার ছিল না। ছিল না বিবাহিত নারীকে দ্বিতীয়বার বিয়ে করার কোন অধিকার। স্বামী মৃত্যুর পর স্বামীর সাথেই দাহ করার মত ঘৃণ্য প্রথাও ছিল প্রচলিত।
ইসলাম এসে নারীকে তার সর্বোচ্চ আসনে আসীন করেছে। সংক্ষেপে আয়াত ও হাদীসের উদ্ধৃতিতে তা উল্লেখ করা হল।
জন্ম নেবার অধিকার
নারী জন্মকেই পাপ মনে করা হতো। অকল্যাণকর মনে করা হতো। ইসলাম এসে সেই জাহিলী ধারণাকে পায়ে দলে ঘোষণা করে কন্যা সন্তান জন্ম নেয়াকে সুসংবাদ বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে- ‘যখন তাদের কাউকে কন্যা সন্তানের সুসংবাদ দেয়া হয়, তখন তারা মুখ কাল হয়ে যায় এবং অসহ্য মনস্তাপে ক্লিষ্ট হতে থাকে। তাকে শোনানো সুসংবাদের দুঃখে সে লোকদের কাছ থেকে মুখ লুকিয়ে থাকে। সে ভাবে, অপমান সহ্য করে তাকে থাকতে দেবে, না তাকে মাটির নীচে পুতে ফেলবে। শুনে রাখ, তাদের ফয়সালা খুবই নিকৃষ্ট।’ [সূরা নাহল-৫৮-৫৯]
কন্যা সন্তানকে হত্যা করাকে ভয়াবহ জঘন্য গোনাহ বলে আখ্যায়িত করে ইরশাদ হচ্ছে- ‘যখন জীবন্ত প্রোথিত কন্যাকে জিজ্ঞেস করা হবে, কি অপরাধে তাকে হত্য করা হল?’ [সূরা তাকয়ির-৮-৯]
প্রতিপালনের অধিকার
নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, যার ঘরে কন্যা সন্তান হয়, তারপর তাকে ভালোভাবে প্রতিপালন করে, তাহলে এ কন্যা তার জন্য জাহান্নাম থেকে বাঁচার দেয়াল হয়ে যাবে। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-২৬২৯]
হযরত আনাস বিন মালিক রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি দু’টি কন্যা সন্তান প্রতিপালন করে। এমনকি তারা প্রাপ্ত বয়স্কা হয়ে যায়। তাহলে উক্ত ব্যক্তি কিয়ামতের দিন আমাদের দুই আঙ্গুল যতটুকু কাছাকাছি সে আমার ততটুকু কাছে থাকবে। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-২৬৩১]
পুরুষের উপর রয়েছে নারীদের অধিকার
আর পুরুষদের যেমন স্ত্রীদের উপর অধিকার রয়েছে, তেমনি ভাবে স্ত্রীদেরও অধিকার রয়েছে পুরুষদের উপর নিয়ম অনুযায়ী। [সূরা বাকারা-২২৮]
তোমাদের নারীদের উপর অধিকার রয়েছে। তেমনি নারীদেরও তোমাদের উপর হক রয়েছে। [সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-১৮৫১, তিরমিজী, হাদীস নং-১১৬৩]
বিয়ের পূর্ণ অধিকার নারীর
কোন বিধবা নারীকে তার সম্মতি ব্যতীত বিয়ে দেয়া যাবে না এবং কুমারী মহিলাকে তার অনুমতি ছাড়া বিয়ে দিতে পারবে না। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৫১৩৬]
হযরত আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, মেয়ে তার ব্যক্তিগত বিষয়ে অভিভাবকের চেয়ে অধিক হকদার। {মুয়াত্তা মালিক, হাদীস নং-৮৮৮, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-১৪২১, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-১৮৮৮, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-২০৯৮, সুনানে দারেমী, হাদীস নং-২২৩৪, সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং-১১০৮, সুনানে নাসায়ী, হাদীস নং-৩২৬০, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৪০৮৪, সুনানে দারাকুতনী, হাদীস নং-৩৫৭৬}
হযরত বুরাইদা রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, জনৈক মহিলা নবীজী সাঃ এর কাছে এসে বলল, আমার পিতা আমাকে তার ভাতিজার কাছে বিয়ে দিয়েছে, যাতে তার মর্যাদা বৃদ্ধি পায়। রাবী বলেন, তখন রাসূল সাঃ বিষয়টি মেয়ের ইখতিয়ারের উপর ন্যস্ত করেন, [অর্থাৎ ইচ্ছে করলে বিয়ে রাখতেও পারবে, ইচ্ছে করলে ভেঙ্গেও দিতে পারবে] তখন মহিলাটি বললেন, আমার পিতা যা করেছেন, তা আমি মেনে নিলাম। আমার উদ্দেশ্য ছিল, মেয়েরা যেন জেনে নেয় যে, বিয়ের ব্যাপারে পিতাদের [চূড়ান্ত] মতের অধিকার নেই্ {সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-১৮৭৪, মুসনাদে ইসহাক বিন রাহুয়াহ, হাদীস নং-১৩৫৯, সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-৩৫৫৫}
নারীর উপার্জন তার নিজের
পুরুষ যা অর্জন করে সেটা তার অংশ এবং নারী যা অর্জন করে সেটা তার অংশ। [সূরা নিসা-৩২
মোহর পাবার অধিকার
আর তোমরা স্ত্রীদেরকে তাদের মোহর দিয়ে দাও খুশীমনে। [সূরা নিসা-৪]
উত্তম ব্যবহার পাবার অধিকার
নারীদের সাথে সদ্ভাবে জীবন-যাপন কর। অতঃপর যদি তাদেরকে অপছন্দ কর, তবে হয়ত তোমরা এমন এক জিনিসকে অপছন্দ করছ, যাতে আল্লাহ, অনেক কল্যাণ রেখেছেন। [সূরা নিসা-১৯]
হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, মুমিনদের মধ্যে পূর্ণতর মুমিন সেই ব্যক্তি, যার আচার আচারণ উত্তম। আর তোমাদের মাঝে উত্তম সেই ব্যক্তি যে তার স্ত্রীদের কাছে উত্তম। {সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৪১৭৬}
হযরত আয়শা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, মুমিনদের মাঝে সেই ব্যক্তি অধিকতর পূর্ণ মুমিন, যে ব্যক্তি সদাচারী এবং নিজ পরিবারের জন্য কোমল এবং অনুগ্রহশীল। {মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-২৪২০৪, তিরমিজী, হাদীস নং-২৬১২}
মীরাছ পাবার অধিকার
‘পিতা-মাতা ও আত্নীয়-স্বজনদের পরিত্যক্ত সম্পত্তিতে পুরুষদেরও অংশ আছে এবং পিতা-মাতা ও আত্নীয়-স্বজনদের পরিত্যক্ত সম্পত্তিতে নারীদেরও অংশ আছে; অল্প হোক কিংবা বেশী। এ অংশ নির্ধারিত।’ [সূরা নিসা-৭]
নারী পুরুষ সমান মর্যাদার
‘যে লোক পুরুষ হোক কিংবা নারী, কোন সৎকর্ম করে এবং বিশ্বাসী হয়, তবে তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে এবং তাদের প্রাপ্য তিল পরিমাণ ও নষ্ট হবে না।’ [সূরা নিসা-১২৪]
‘যে মন্দ কর্ম করে, সে কেবল তার অনুরূপ প্রতিফল পাবে, আর যে, পুরুষ অথবা নারী মুমিন অবস্থায় সৎকর্ম করে তারাই জান্নাতে প্রবেশ করবে। তথায় তাদেরকে বে-হিসাব রিযিক দেয়া হবে।’ [সূরা গাফির-৪০]
‘যে সৎকর্ম সম্পাদন করে এবং সে ঈমাণদার, পুরুষ হোক কিংবা নারী আমি তাকে পবিত্র জীবন দান করব এবং প্রতিদানে তাদেরকে তাদের উত্তম কাজের কারণে প্রাপ্য পুরষ্কার দেব যা তারা করত।’ [সূরা নাহল-৯৭]
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘নিশ্চয় নারীরা মানুষের অধিকার হিসেবে পুরুষের সমমানের।’ [সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-২৩৬]
স্বামী ঠিকমত খরচ দিতে না পারলে তালাক চাইতে পারবে স্ত্রী
‘স্ত্রী বলবে, হয়তো আমার খরচ দাও, নতুবা আমাকে তালাক দাও।’ [বুখারী, হাদীস নং-৫৩৫৫]
খরচ কম দিলে না জানিয়ে খরচ নিয়েও যেতে পারবে!
‘আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, মু‘আবিয়া (রাঃ)-এর মা হিন্দা আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে বলেন, আবূ সুফিয়ান (রাঃ) একজন কৃপণ ব্যক্তি। এমতাবস্থায় আমি যদি তার মাল হতে গোপনে কিছু গ্রহণ করি, তাতে কি আমার গুনাহ হবে? তিনি বললেন, তুমি তোমার ও সন্তানদের প্রয়োজন অনুযায়ী ন্যায়ভাবে গ্রহণ করতে পার।’ [বুখারী, হাদীস নং-২২১১]
মা হিসেবে অধিকার
‘তোমার পালনকর্তা আদেশ করেছেন যে, তাঁকে ছাড়া অন্য কারও এবাদত করো না এবং পিতা-মাতার সাথে সদ্ব-ব্যবহার কর। তাদের মধ্যে কেউ অথবা উভয়েই যদি তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হয়; তবে তাদেরকে ‘উহ’ শব্দটিও বলো না এবং তাদেরকে ধমক দিও না এবং বল তাদেরকে শিষ্ঠাচারপূর্ণ কথা। তাদের সামনে ভালবাসার সাথে, নম্রভাবে মাথা নত করে দাও এবং বলঃ হে পালনকর্তা, তাদের উভয়ের প্রতি রহম কর, যেমন তারা আমাকে শৈশবকালে লালন-পালন করেছেন।’ [সূরা ইসরা-২৩, ২৪]
হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ‘এক ব্যক্তি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এসে জিজ্ঞাসা করল যে, পিতা মাতার মাঝে কে সবচে’ বেশি উত্তম ব্যবহারের উপযুক্ত? নবীজী বললেন, তোমার মা। লোকটি আবার বলল, তারপর কেন? নবীজী বললেন, তোমার মা। লোকটি আবার জিজ্ঞাসা করলেন, তারপর কে? নবীজী বললেন, তোমার মা। লোকটি আবার জিজ্ঞাসা করলেন, তারপর কে? নবীজী বললেন, তোমার বাবা।’ [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-২৫৪৮]
হযরত আনাস বিন মালিক রাঃ থেকে বর্ণিত। নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘জান্নাত হল, মায়ের পায়ের নিচে।’ [মুসনাদুশ শিহাব, হাদীস নং-১১৯]
পুরুষের দায়িত্ব বেশি নারীর হক বেশি
হক। যাকে বাংলায় বলি অধিকার। অধিকারের ফলাফল হল ভোগ। আর দায়িত্ব এর ফলাফল হল ত্যাগ। যে হক বেশি পায়,সে ভোগ করার সুযোগ বেশি পায়। আর যার দায়িত্ব বেশি তার ত্যাগের পরিমাণ বেশি হতে হয়।
আল্লাহ পুরুষদের দায়িত্ব বেশি দিয়েছেন।
আর নারীদের হক বেশি দিয়েছেন।
এ কারণে জন্ম থেকে বিয়ে পর্যন্ত নারীর যাবতীয় খরচ বাবার দায়িত্বে। আর বিয়ের যাবতীয় খরচ স্বামীর দায়িত্বে।
অন্য শব্দে বললে জন্ম নেবার পর থেকে মৃত্যু পর্যন্ত পুরুষের দায়িত্ব হল, নারীর দেখাশোনা করা। তার জন্য মাথার ঘাম পায়ে ফেলে উপার্জন করে এনে তার প্রতিপালন করা। তার খিদমাত করা।
‘পুরুষেরা নারীদের উপর কৃর্তত্বশীল এ জন্য যে, আল্লাহ একের উপর অন্যের বৈশিষ্ট্য দান করেছেন এবং এ জন্য যে, তারা তাদের অর্থ ব্যয় করে।’ [সূরা নিসা-৩৪]
‘আর তোমাদের উপর তাদের অধিকার এই যে, তোমরা (যথাসম্ভব) তাদের পোশাক-পরিচ্ছদ ও আহারের সুব্যবস্থা করবে।’ [সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং-৩০৮৭]
রাষ্ট্রপতির মর্যাদা
‘তোমরা গৃহাভ্যন্তরে অবস্থান করবে-মূর্খতা যুগের অনুরূপ নিজেদেরকে প্রদর্শন করবে না।’ [সূরা আহযাব-৩৩]
‘হে নবী! আপনি আপনার পত্নীগণকে ও কন্যাগণকে এবং মুমিনদের স্ত্রীগণকে বলুন, তারা যেন তাদের চাদরের কিয়দংশ নিজেদের উপর টেনে নেয়। এতে তাদেরকে চেনা সহজ হবে। ফলে তাদেরকে উত্যক্ত করা হবে না। আল্লাহ ক্ষমাশীল পরম দয়ালু।’ [সূরা আহযাব-৫৯]
যেমন একজন রাষ্ট্রপতির নিজেই কামাই করতে হয় না। উপার্জন করতে রাস্তায় বের হতে হয় না। তার সব কিছুই তার খাদিম খুদ্দামরা করে দেয়। তিনি থাকেন সুদৃঢ় প্রাচির ঢাকা কক্ষে।
যখন কোন প্রয়োজনে বের হন, তখনো সেই প্রটোকল, সেই নিরাপত্তার চাদরে ঢেকেই বের হন।
তেমনি নারী হল মর্যাদাবান। ঘরের রাষ্ট্রপতি। তার যাবতীয় প্রয়োজন পূর্ণ করা দায়িত্ব পুরুষের। যখন কোন প্রয়োজনে বের হয়, তখনো তার নিরাপত্তায় পুরুষ সঙ্গী বডিগার্ড হিসেবে থাকা জরুরী। যেন কোন লম্পট তার দিকে অসম্মানী দৃষ্টিতে তাকাতে না পারে। নারী তার প্রটোকল হিসেবে সম্মানের পর্দা দিয়ে পূর্ণ শরীর ঢেকে রাস্তায় বের হবেন।
এটা তার জন্য অপমান নয় সম্মানের। ইজ্জতহানী নয়, বরং সর্বোচ্চ ইজ্জত প্রদান।
যারা নারীদের সম্মানের নামে রাস্তায় বের করতে চায়, তারা মূলত নিজেদের লাম্পট্যতার খাহেশ পূর্ণ করার জন্য এমনটি করে থাকে।
এ কারণে ধর্ষণের শীর্ষে এক নাম্বারে আমেরিকা। ব্রিটেন, জার্মানী, ফ্রান্স, কানাডা, নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, ডেনমার্ক এবং ফিনল্যান্ডের মত উলঙ্গপনার রাষ্ট্রগুলো ধর্ষণ শীর্ষ তালিকায় দশ দেশের মাঝে থাকে।
যা প্রমাণ করে, নারীদের রাস্তায় নামিয়ে, পণ্য বানিয়ে আমেরিকান রা যেমন ৯১% নারীদের ধর্ষণের শিকার বানিয়েছে। তেমনি পুরো বিশ্বের নারীদের নারীবাদের স্লোগান দিয়ে এমন লজ্জাজনক অবস্থায় ফেলতে চায়।
ইসলাম এ নোংরামী ও লজ্জা থেকে নারীকে রক্ষা করতে পর্দার বিধান দিয়েছে।
শেষ কথা
আজ পুরো বিশ্বজুড়ে নারীরা নিপেড়িত। নির্যাতিত। নিষ্পেষিত। ধর্ষণের শিকার। নেই নারীদের প্রকৃত মর্যদা। ইজ্জত ও সম্মান। দুই টাকার ম্যাচ বাক্সে,রাস্তার বিলবোর্ডে,পত্রিকার পাতায় পাতায় নারীকে অর্ধ উলঙ্গ করে আবাল বৃদ্ধ বণিতার নোংরা দৃষ্টির লক্ষ্যবস্তু বানানো হচ্ছে সেই জাহেলী যুগের পন্থায়।
নারীবাদ আর নারী মুক্তির নামে নারীকে পণ্য বানানোর মহড়া চলছে সর্বত্র। কেবলি একটি ভোগ্য পণ্য, যৌন খেলনা হিসেবে পেশ করা হচ্ছে পর্নগ্রাফী এবং নাটক সিনেমার পর্দায়।
নারী জাতির এহেন লজ্জাজনক নব্য জাহিলিয়্যাতকে রুখতে হলে, নারীমুক্তির একমাত্র অবলম্বন হল মানবতার নবী, রাহমাতুল্লিল আলামীনের আদর্শ ও নারী অধিকারকে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা।
আমাদের আজকের এ সেমিনার পুরো বিশ্ববাসীর কাছে নারী মুক্তির একমাত্র ত্রাতা মহানবীর ইনসাফপূর্ণ, সম্মানজনক জীবনব্যবস্থার দিকে ফিরে যাবার আহবান করছে।
আল্লাহ তাআলা আমাদের তৌফিক দান করুন। আমীন।